মোঃ আবদুর রহমানঃ নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজরতের পর মদীনা শরীফ গিয়ে ঐ এলাকাবাসীর দুটি উৎসব বন্ধ করেছিলেন। একটি হচ্ছে, বছরের প্রথম দিন উদযাপন বা নওরোজ; অন্যটির নাম ছিলো ‘মিহিরজান’। এ উৎসবের দুটির বিপরীতে চালু হয় মুসলমানদের দুই ঈদ। (তাফসিরসমূহ দেখতে পারেন) মূলত: নওরোজ বা বছরের প্রথম দিন পালন করার রীতি ইসলামে নেই, এটা পার্সী মজুসীদের (অগ্নিউপাসক) অনুকরণ। এ সম্পর্কে হাদীস শরীফে এসেছে: “যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করে সে তাদের দলভুক্ত।” তাই যে কোন নওরোজ সেটা থার্টি ফাস্ট নাইট হোক, পহেলা নববর্ষ হোক কিংবা পহেলা মুহররম হোক, বিজাতীয় রীতি হিসেবে প্রতেকটি ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ সম্পর্কে—–
(১) ইমাম ফখরুদ্দীন উসমান বিন আলী আয যাইলায়ী বলেন: * “নওরোজ ও মেলার নামে কিছু দেয়া নাজায়েয। এ দুই দিনের নামে প্রদত্ত হাদিয়া হারাম; বরঞ্চ কুফর”। (গ্রন্থ – তাবইনুল হাকায়েক : ৬/২২৮)
(২) ইমাম হাফস কবীর রহমতুল্লাহি বলেন: *(ক) “নওরোজ বা বছরের প্রথম দিন উপলক্ষে যদি কেউ একটা ডিমও দান করে, তবে তার ৫০ বৎসরের আমল থাকলে তা বরবাদ হয়ে যাবে” *(খ) “যে ব্যক্তি নওরোজের দিন এমন কিছু খরিদ করল যা সে পূর্বে খরিদ করত না, এর মাধ্যমে সে যদি ঐ দিনকে সম্মান করতে চায় তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে।”
(৩) হাম্বলি মাযহাবের ফিকাহর গ্রন্থ ‘আল- ইকনা’ তে বলা হয়েছে- “কাফিরদের উৎসবে যোগদান করা, সেই দিন উপলক্ষে বেচা- বিক্রি করা ও উপহার বিনিময় করা হারাম”।
নববর্ষ উদযাপন করে আমরা যাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করছি, তারা প্রকৃতপক্ষে আমাদের শত্রু। তারা কখনো আমাদের বন্ধু হবে না, যাবত আমরা আমাদের দীন ত্যাগ করে তাদের ধর্মের অনুসরণ না করি। তারা আমাদের দীন ও নবীকে নিয়ে উপহাস করে।ইরশাদ :হচ্ছে ﴿ ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮﺍْ ﻟَﺎ ﺗَﺘَّﺨِﺬُﻭﺍْ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﭐﺗَّﺨَﺬُﻭﺍْ ﺩِﻳﻨَﻜُﻢۡ ﻫُﺰُﻭٗﺍ ﻭَﻟَﻌِﺒٗﺎ ﻣِّﻦَ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺃُﻭﺗُﻮﺍْ ﭐﻟۡﻜِﺘَٰﺐَ ﻣِﻦ ﻗَﺒۡﻠِﻜُﻢۡ ﻭَﭐﻟۡﻜُﻔَّﺎﺭَ ﺃَﻭۡﻟِﻴَﺎٓﺀَۚ ﻭَﭐﺗَّﻘُﻮﺍْ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﺇِﻥ ﻛُﻨﺘُﻢ ﻣُّﺆۡﻣِﻨِﻴﻦَ ٥٧﴾ ] ﺍﻟﻤﺎﺉ ﺩﺓ : ٧ ]
অর্থ: হে মুমিনগণ, তোমরা তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যারা তোমাদের দীনকে উপহাস ও খেল- তামাশারূপে গ্রহণ করেছে, তাদের মধ্য থেকে তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে ও কাফিরদেরকে। আর আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক”।
অন্যত্র ঘোষণা দিচ্ছেন, যে তাদের দিকে ধাবিত হবে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত। ইরশাদ হচ্ছে : ﴿ ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮﺍْ ﻟَﺎ ﺗَﺘَّﺨِﺬُﻭﺍْ ﭐﻟۡﻴَﻬُﻮﺩَ ﻭَﭐﻟﻨَّﺼَٰﺮَﻯٰٓ ﺃَﻭۡﻟِﻴَﺎٓﺀَۘ ﺑَﻌۡﻀُﻬُﻢۡ ﺃَﻭۡﻟِﻴَﺎٓﺀُ ﺑَﻌۡﺾٖۚ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﺘَﻮَﻟَّﻬُﻢ ﻣِّﻨﻜُﻢۡ ﻓَﺈِﻧَّﻪُۥ ﻣِﻨۡﻬُﻢۡۗ ﺇِﻥَّ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻟَﺎ ﻳَﻬۡﺪِﻱ ﭐﻟۡﻘَﻮۡﻡَ ﭐﻟﻈَّٰﻠِﻤِﻴﻦَ ٥١﴾ ] ﺍﻟﻤﺎﺋﺪﺓ : ٥١ ]
অর্থ: হে মুমিনগণ, ইহুদি ও নাসারাদেরকে তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। আর তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে নিশ্চয় তাদেরই একজন। নিশ্চয় আল্লাহ জালিম কওমকে হিদায়াত দেন না”
অতএব তাদের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া, তাদের সমর্থন জানানো কিংবা কোন ধরণের সহায়তা করা নিজের দীনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। উপরক্ত দলিল দেখলে এটা সহজেই বুঝা সম্ভব, থার্টি ফাস্ট নাইট, পহেলা নববর্ষ, পহেলা মুহররম শুধু পালন করা হারাম নয়, বরং ঐ দিবস উপলক্ষে কাউকে শুভেচ্ছা জানানো, কিংবা ঐ দিবস গুলো উপলক্ষে কোন অফার দিলে সেটা গ্রহণ করা, ঐ দিবস উপলক্ষে কেনাবেচা করা, খাদ্য গ্রহণ করা হারাম ও ক্ষেত্র বিশেষে কুফরী।
পহেলা বৈশাখ অনেকেরই বিভিন্ন প্রকার ধর্মীয় পূজা উৎসব রয়েছে।
যেমন,
১) হিন্দুদের ঘটপূজা
২) হিন্দুদের গণেশ পূজা
৩) হিন্দুদের সিদ্ধেশ্বরী পূজা
৪) হিন্দুদের ঘোড়ামেলা
৫) হিন্দুদের চৈত্রসংক্রান্তি পূজা-অর্চনা
৬) হিন্দুদের চড়ক বা নীল পূজা বা শিবের উপাসনা ও সংশ্লিষ্ট মেলা
৭) হিন্দুদের গম্ভীরা পূজা
৮) হিন্দুদের কুমীরের পূজা
৯) হিন্দুদের অগ্নিনৃত্য
১০) ত্রিপুরাদের বৈশুখ
১১) মারমাদের সাংগ্রাই ও পানি উৎসব
১২) চাকমাদের বিজু উৎসব
(ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমাদের পূজাউৎসবগুলোর সম্মিলিত নাম বৈসাবি)
১৩) হিন্দু ও বৌদ্ধদের উল্কিপূজা
১৪) মজুসি তথা অগ্নি পূজকদের নওরোজ
১৫) হিন্দুদের বউমেলা
১৬) হিন্দুদের মঙ্গলযাত্রা
১৭) হিন্দুদের সূর্যপূজা
এখন যেসকল মুসলমান নামধারীরা পহেলা বৈশাখ পালন করে তাদের কাছে প্রশ্ন এখানেতো সব বির্ধমী দের পুজা মুসলমানদের জন্য কিছু আছে কি ?
যদি মুসলমান থাকতে চান তবে এখনি পহেলা বৈশাখ পালন থেকে বিরত থাকুন…….রার তখন কোনই কদর থাকবে না।
তাই আপু ! দুনিয়ার সামান্য আনন্দের মোহে নিজের দ্বীন ধর্মকে বাদ দিবেন না, একদিন কোন কঠিন মুহুর্তে হয়ত এই বেকডেটেড এর কথাই আপনার মনে পড়বে।